ইতিহাসের পাল্লায় ৭১-এর দায় কার বেশি | আওয়ামী বয়ানে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসা

আওয়ামী লীগের পতনের মূল কারণ ছিলো ৭১ নিয়ে রাজনৈতিক, মতাদর্শিক ব্যবসা। ৭১ নিয়ে প্রমাণহীন ব্লেমিং ও নিজেকে ৭১-এর প্রতিভূ হিসেবে হাজির করা। বর্তমানে হঠাৎ করে বিএনপি সেই পুরনো রাস্তা অবলম্বন করে আওয়ামী বয়ানে জামায়াতকে নিয়ে ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তো আসুন ইতিহাসের আলোকে দেখে নেই কার কতটা দায় দলগতভাবে।

প্রথমেই আসা যাক ৫ই আগস্টের পর হঠাৎ করে ক্ষমতাশালী হয়ে যাওয়া বিএনপি বিষয়ে। বিএনপির রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা হয় একজন সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের অধিনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে।

জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করেন সার্বজনীন লোক নিয়ে। তার দলের মূল অংশ ছিলো রাজাকার। শুধু তাই না, বাংলাদেশের ইতিহাসে জিয়াউর রহমান একমাত্র ব্যক্তি যিনি একজন রাজাকারকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন।
আর এই ব্যক্তিটি হলো ৭১-এর স্বীকৃত যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজুর রহমান। ৭১ সালে এই শাহ আজিজুর রহমান আব্দুল মালেক মন্ত্রীসভার মন্ত্রী ছিলো। মানে ৭১ সালকে যদি গণহত্যা বলেন তাহলে এই দায়ে সরাসরি অভিযুক্ত শাহ আজিজুর রহমান।

আর সেই লোককে জিয়াউর রহমান তার দল বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানান। বিএনপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলো একজন যুদ্ধাপরাধী!

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হন মশিউর রহমান যাদু মিয়া। মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নামেও কিছু অভিযোগ আছে। তাকে ৭২ সালে দালাল আইনে গ্রেফতারও করা হয়।

সুতরাং বর্তমানে হুট করে চেতনা জাগ্রত হওয়া দলের সুপ্রিম লিডার জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র যিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে দিয়েছিলেন ২ জন যুদ্ধাপরাধীকে!

বিএনপির আরো একজন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি হলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। তিনি ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী ছিলেন।

এরপর আসে শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কথা। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ৩ বারের সংসদ সদস্য ছিলেন।

আহসানুল হক মোল্লা, যিনি পচা মোল্লা নামেও পরিচিত। তিনি কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসন থেকে পরপর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৩ আসন থেকে বিএনপির হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

মির্জা রুহুল আমিন প্রাক্তন মন্ত্রী ও ঠাকুরগাঁও-২-এর অঞ্চলের সাবেক সংসদীয় প্রতিনিধি। দালাল আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। তাঁর ছেলে বর্তমানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ড. ওসমান ফারুক ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপির হয়ে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন থেকে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া সরকারের মন্ত্রিসভায় শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।

মাহমুদুন্নবী চৌধুরী, ১৯৭১ সালে তিনি চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের ডবলমুরিং-সীতাকুন্ড থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রথমে গণ-যোগাযোগ মন্ত্রী এরপর ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ছেলে হলো আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মোটামুটি শর্টলিস্ট করে প্রধান প্রধান ব্যক্তিবর্গের তালিকা এটা। যারা বিএনপিতে প্রমিনেন্ট ব্যক্তি ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এসেছে।

এবার আসা যাক আওয়ামী লীগের হিসেবে। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট ৪৬ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা নিম্নরূপ,

আওয়ামী লীগের এই ৪৬ জন যুদ্ধাপরাধী তাদের পরিবার কোন না কোনভাবে ৭১ সালে পাকিস্তান সরকার ও যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন।১৯৭১ সালে মক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন তারা।

► অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম:
ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রাজাকার পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলামি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের শায়েস্তা করার জন্য তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয়। একই সঙ্গে তিনি রাজাকার, আল বদর ও আল শাসম বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি মু্ক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৬৯ সালে এ দেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন জোরদার হলে নেজামের ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার প্রচারণা চালানোর জন্য ‘নেজামে ইসলাম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। হাকিম অজিজুল ইসলাম এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। শেখ মজিবুর রহামনসহ পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে তিনি এ পত্রিকায় ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে প্রতি সপ্তাহে বিশেষ সম্পাদকীয় লিখেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় হন। এর মধ্যে দিয়ে রাজাকার
পরিবারের গন্ধ হতে মুক্ত হতে চান তিনি। তার ব্যাপারে ‌‌’মুক্তিযুদ্ধে ইসলামী দল’ শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

► লে.কর্ণেল (অব) ফারুক খান:
পর্যটন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর পক্ষে প্রথম অপারেশন চালান এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সুত্র: “দিনাজপুরের মক্তিযুদ্ধ” বই।

► ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন:
ফরিদপুর– ৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যার জন্য হানাদার বাহিনীদের প্ররোচিত করেন। “ দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।

► অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন:
ময়মনসিংহ ৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও
শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে গত বছরের ৪ এপ্রিল ট্রাইবুনাল ওয়ার ক্রাইম ফাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা, এম এ হাসানের দেয়া যুদ্ধাপরাধের তালিকায় (ক্রমিক নং-৭৩) উল্লেখ করা হয়েছে। যা গত ২২ এপ্রিল দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ দিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্বে গত ৬ এপ্রিল ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও জোড়বাড়িয়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ময়মনসিংয়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

► সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী:
আওয়মী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সংসদ উপনেতা ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর কাছে একজন আস্থাভাজন নেত্রী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে ৮৮ জনকে পাকিস্তানের সামরিক সরকার আস্থাভাজন এন এন এ মেম্বার অব ন্যাশনাল এজেন্সী হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭১ সালে ৭ আগষ্ট পাকিস্তানের তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই তালিকায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম ছিল ৮৪ নম্বরে। জেনারেল রোয়াদেদ খান ওই দিন ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন জানানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করার সুবাদে তিনি এ খ্যাতি অর্জন করেন বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে এ তথ্য উল্লেখ আছে।

► সৈয়দ জাফরউল্লাহ:
আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। মাসিক “সহজকথা” আয়োজিত যুদ্ধাপরাধের বিচার:বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরঊল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। জাফর উল্লাহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পূর্ণ সমর্থন দেন। “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান ” বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

► মুসা বিন শমসের:
গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ করে ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন, শেখ সেলিম যে তার ছেলেকে ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসেরর মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন তার কথা কেউ বলছেন না কেন? এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের বেয়াই। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে। তিনি নিরীহ বাঙ্গালীদের গণহত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্দ্ধাদের হত্যাসহ নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে জানা গেছে।

► মির্জা গোলাম কাশেম:
জামালপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য, যুবলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা। ১৯৭১ সালে মির্জা কাশেম জামালপুরের মাদারগঞ্জে শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তিনি রাজাকার, আল-বদরদের গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। তার বিরুদ্ধে নারী ধর্ষণ ও লুটপাটের একাধিক অভিযোগ আছে। যা “জামালপুরের মুক্তিযুদ্ধ ( “১৯৮১ সালের সংস্বকরণ” বইয়ে উল্লেখ আছে। মির্জা কাশেম জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। প্রিয় নেতার নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন মির্জা গোলাম আযাম।

► এইচ এন আশিকুর রহমান:
রংপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচ এন আশিকুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তার সরকারের অধীনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে টাঙ্গাইলে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেন। এস এস এম শামছুল আরেফিন রচিত ‘মুক্তিযুদ্বের প্রেক্ষাপট ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ের ৩৫০ পৃষ্টায় পূর্ব
পাকিস্তানে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়েছে। ৯ জানুয়ারি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজাকার আশিকুর রহমান আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বলে তার বিচার করবেন না তা হয় না। আমরা সব রাজাকারের বিচার চাই। মন্ত্রীসভায় রাজাকার রেখে রাজাকারের বিচার করা যায় না।

► মহিউদ্দিন খান আলমগীর:
চাদপুর-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়মনসিংহে অতিরিক্তি জেলা প্রশারক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ সময় আরেফিন রচিত “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান বইয়ের ৩৫০ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে চিহ্নিত রাজাকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তার বিচার দাবি করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

► মাওলানা নুরুল ইসলাম:
জামালপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জামালপুর সরিষা বাড়ী এলাকার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকাররা ঐ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। “ দৃশ্যপট এক্ত্তার: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” গ্রন্থের ৪৫ পৃষ্ঠায় এর বিবরণ দেয়া আছে। এ ছাড়া গত ২৮ এগ্রিল দৈনিক আমাদের সময় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মাওলানা নুরুল ইসলামকে সরিষাবাড়ি এলাকার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

► মজিবর রহামান হাওলাদার:
কুটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান হাওলাদার সশস্ত্র রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায়
বসতবাড়ীতে অগ্নিকাণ্ড ঘটানোসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরে । এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকায়ও যুদ্বাপরাধী হিসেব তার নাম আছে।

► আবদুল বারেক হাওলাদার:
গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের পিতা আবদুল বারেক হাওলাদার ৭১ এ দালাল ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪১ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট । দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকাতেও তার নাম আছে। বারেক হাওলাদার মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন।

► আজিজুল হক:
গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের ভাই আজিজুল হক কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪৯ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানেও তার নাম রয়েছে।

► মালেক দাড়িয়া:
আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়ার বাবা মালেক দাড়িয়া কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি ছিলেন আল বদরের একনিষ্ঠ সহযোগী। গণহত্যায় নেতৃত্ব দেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১৪০ নম্বরে। তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট।

► মোহন মিয়া:
গোপালগঞ্জ কোটারিপাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি আমির হোসেনের পিতা মোহন মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালাল ও রাজাকার
ছিলেন। স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম ছিল ১৫৭ নম্বরে।

► মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া:
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়ার বাবা মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া রাজাকার ছিলেন। যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম আছে। তিনি পাকিস্তানীদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ
করতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের গোপন খবর পাকবাহিনীকে পৌঁছে দিতেন।

► রেজাউল হাওলাদারঃ
কোটালিপাড়া পৌর মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম অহেদুল ইসলামের ভগ্নিপতি রেজাউল হাওলাদের নাম ২০৩ জন রাজাকার, আল বদর, আলশামসসহ গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি আল বদর সদস্য হিসেব স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

► বাহাদুর হাজরাঃ
কোটালিপাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলামের পিতা বাহাদুর হাজরার নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন সক্রিয় রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।

► আ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারঃ
গোপালগঞ্জের এ পি পি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি পাকিস্তানীদের দোসর ও আল বদর বাহিনীর সহযোগী ছিলেন। আল বদর বাহিনীর সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করতেন তিনি।

► হাসেম সরদার:
অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের পিতা হাসেম সরদারের নাম কোটালীপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন রাজাকার ছিলেন। ৭১ সালে তার নেতৃত্বে অনেক সাধারণ বাঙালির বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।

► আবদুল কাইয়ুম মুন্সি:
জামালপুর বকশিগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি অবুল কালাম আজাদের পিতা আবদুল কাইয়ুম মুন্সীর বিরুদ্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে সহয়তা ও মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল জামালপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মালিচর নয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক আলী এ মামলা দায়ের করেন। আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত বলে জানা গেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বকশিগঞ্জে আল বদর বাহিনী গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পাক বাহিনীর সাথে থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেন।

► নুরুল ইসলাম-নুরু মিয়া:
শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম নূরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গত ২১ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক করেন। এ সময় তারা মন্ত্রী ও তার ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, তার বাবা নূরু মিয়া মু্ক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকর ছিলেন। এর উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ফরিদপুরের রাজাকারের তালিকায় ১৪ নম্বরে নুরু মিয়ার নাম থাকলেও তিনি যুদ্বাপরাধী ছিলেন না। পরের দিন ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় এ খবরটি প্রকাশিত হয়। নুরু মিয়ার অপকর্মের বিষয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ে বিস্তারিত বলা আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন প্রতিনিধি হয়েও আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন।

► নেত্রকোণার আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী ও মানবতার বিরূদ্ধে অপরাধ সংগঠনকারীবৃন্দ-
১. নেত্রকোণা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম খান,
২. বায়লাতি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ডাঃ গিয়াসউদ্দীন আহমদ।
৩. নেত্রকোনা শহর আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব সোহরাব হোসেন ও
৪. নেত্রকোনা মহকুমা আওয়ামীলীগের সদস্য সদস্য জনাব এমদাদুল হক
৫. নেত্রকোনা শহর আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম (এ্যাডভোকেট)
► তথ্যসূত্র: দৈনিক আজাদ,তাং- ১০-৯-১৯৭১ ,পৃঃ ৫-ক-৬, প্রকাশ ঢাকা ।
► তথ্য সূত্র: দৈনিক আজাদ, তাং- ৪-৮-১৯৭১ , পৃঃ ৫-ক-৩, প্রকাশ-ঢাকা।

এই সূত্রে পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তায় তাদের সম্পৃক্ততার ঘটনাটিকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে-
নেত্রকোণার আওয়ামী লীগের চারজন সদস্য সমপ্রতি সংবাদ পত্রে প্রদত্ত বিবৃতিতে দলের সহিত সম্পর্কচ্ছেদ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তাহারা বিবৃতিতে বলেন যে, তাহারা আওয়ামী লীগের পাকিস্তানের ঐক্য বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। ভারতের ন্যাক্কারজনক আক্রমণাত্মক তৎপরতা এবং ভারত কর্তৃক সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ ও নাশকতামূলক কার্য সাধণের জন্য ভারতের প্রতি তীব্র নিন্দা করিয়া তাহারা পাকিস্তানের ঐক্যও সংহতি রক্ষাকল্পে সময়োচিত হসক্ষেপের জন্য প্রেসিডেন্টও সেনাবাহিনীর প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদান কারীগণ হইলেনঃ নেত্রকোণা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরূল ইসলাম খান, বায়লাতি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ডাঃ গিয়াসউদ্দীন আহমদ। নেত্রকোনা শহর আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব সোহরাব হোসেন ও নেত্রকোনা মহকুমা আওয়ামীলীগের সদস্য জনাব এমদাদুল হক।’
► চাঁদপুর জেলার আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠনকারীবৃন্দ-
৬. চাঁদপুর আওয়ামী লীগের জনাব চান্দ বখশ পাটওয়ারী মোক্তার,
৭. মহকুমা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ মুজিবুর রহমান চৌধুরী,
৮. জনাব নাসির উদ্দীন পাটওয়ারী মোক্তার,
৯. মহকুমা আওয়ামীলীগের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারী জনাব ফজলুল হক এডভোকেট
১০. মহকুমা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সাবেক সদস্য জনাব খুরশীদ আলম চৌধুরী,
১১. মহকুমা আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যাক্ষ জনাব বজলুর রহমান শেখ,
১২. আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও তরপারচান্দি ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মৃধা,
১৩. আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জনাব আজিজ শেখ পাটওয়ারী,
১৪. কণ্ট্রাক্টর ও আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য জনাব মোফাজ্জল হোসেন,
১৫. আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ডাঃ নুরুল ইসলাম ও
১৬. ফরিদগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সমাজকল্যাণ সেক্রেটারী।
► তথ্য সূত্র: দৈনিক আজাদ ,তাং- ৯-৯-১৯৭১ ,পৃঃ ১-ক-২-৩, প্রকাশ ঢাকা।
পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তায় তাদের সম্পৃক্ততার ঘটনাটিকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে-অধুনালুপ্ত আওয়ামীলীগের বেশ কিছু নেতা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট ওয়াদা করিয়া পাকিস্তানের ঐক্য, সংহতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করিয়া যাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করেন। ভারতীয় চর ও রাষ্ট্রদ্রোহী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ব্যাপারে ও তাহারা তাহাদের দৃঢ় সংকল্পের কথা প্রকাশ করেন। সে সকল ব্যক্তি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার দৃঢ় আশ্বাস দিয়েছেন।
তাহারা হইলেন, চাঁদপুর আওয়ামী লীগের জনাব চান্দ বখশ পাটওয়ারী মোক্তার, মহকুমা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ মুজিবুর রহমান চৌধুরী, জনাব নাসির উদ্দীন পাটওয়ারী মোক্তার, মহকুমা আওয়ামীলীগের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারী জনাব ফজলুল হক এডভোকেট, মহকুমা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সাবেক সদস্য জনাব খুরশীদ আলম চৌধুরী, মহকুমা আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যাক্ষ জনাব বজলুর রহমান শেখ, আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও তরপারচান্দি ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মৃধা, আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জনাব আজিজ শেখ পাটওয়ারী, কণ্ট্রাক্টর ও আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য জনাব মোফাজ্জল হোসেন, আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য ডাঃ নুরুল ইসলাম, ফরিদগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সমাজকল্যাণ সেক্রেটারী।
১৭. কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব আমজাদ হোসেন
১৮. টাঙ্গাইলের সাবেক এম.পি.এ জনাব খোদা বখশ মোখতার
► তথ্য সূত্র: দৈনিক আজাদ, তাং- ২১-৫-১৯৭১, পৃঃ ৪-ক-৬, প্রকাশ-ঢাকা।
তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি সূত্র থেকে এভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে:
‘আওয়ামী লীগের ২ জন সদস্য পৃথক পৃথক বিবৃতিতে দল হইতে তাহাদের সম্পর্কচ্ছেদ করিয়া বিচ্ছিন্নতার হাত হইতে দেশকে রক্ষাকল্পে সরকারের সহিত পূর্ণ সহযোগিতা দানের জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছেন। উক্ত ২ জন সদস্য হইতেছেন অধুনালুপ্ত কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব আমজাদ হোসেন, টাঙ্গাইলের সাবেক এম.পি.এ জনাব খোদা বখশ মোখতার।’
১৯. জনাব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
► তথ্য সূত্র: দৈনিক আজাদ, তাং- ৩-৭-১৯৭১, পৃঃ ৬-ক-৬, প্রকাশ-ঢাকা,
তার জড়িত থাকার বিষয়টি সূত্র থেকে এভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে:
চট্টগ্রামের পি.ই.২৪ নির্বাচনী এলাকা হইতে নবনির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য জনাব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের সহিত সকল সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া পাকিস্তানকে সমর্থন করিয়া একটি বিবৃতি প্রদান করিয়াছেন।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হই। একজন পাকিস্তানী নাগরিক হিসাবে এবং সরল বিশ্বাসে আমি এই আশায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিয়াছিলাম। আমি আমার ক্ষুদ্র ক্ষমতা অনুসারে দেশ ও জনগণের খেদমত করিব। পাকিস্তানকে খণ্ড বিখণ্ড করার জন্য জনগণ আমাকে ভোট দেয় নাই।
তিনি বলেন , আওয়ামীলীগের এই সব ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিতাম না এবং ২৫ মার্চের পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে আমাদের দেশের গোলযোগের অবস্থায় আমি কোন সমাজবিরোধী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করি নাই। যথাসময়ে হস্তক্ষেপের জন্য এবং ধ্বংস ও ষড়যন্ত্র হইতে দেশকে রক্ষা করার জন্য আমি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ ও বীর সেনাবাহিনীকে আন্তরিক মোবারক জানাইতেছি।’
২০. পটুয়াখালি হইতে নবনির্বাচিত এম.পি.এ জনাব মুজিবুর রহমান তালুকদার
► তথ্য সূত্র: দৈনিক আজাদ, তাং- ৬-৭-১৯৭১, পৃঃ ৪-ক-৫, প্রকাশ-ঢাকা।

মুক্তিযুদ্ধের মূল দাবিদার দলের হেভিওয়েট লিস্টে ৪৬ জন প্রমিনেন্ট যুদ্ধাপরাধী। আর নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হওয়া বিএনপিতে তো আছেই।

জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করে রাজাকারদের পুনর্বাসনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি তাদের প্রধানমন্ত্রীও করেছেন। তিনিই জামায়াতে ইসলামিকে রাজনীতি করার স্পেস দিয়েছেন। তিনি ৭১-৭৪ পর্যন্ত দেশে লুটপাট ও অজস্র মানুষ খুন করা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে এনেছেন।

তার সহধর্মিণী আপোষহীন নেত্রী বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছেন। তাদের মন্ত্রী এমপি করেছেন। রাজাকারদের এমপি ও মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন।

তো সব মিলিয়ে জামায়াতকে যদি ৭১-এর হিসেবে দল হিসেবে বিচারের মুখোমুখি বা ক্ষমা চাওয়ার মুখোমুখি করতে হয় তাহলে ইতিহাসের পাল্লা মেপে অন্য সবারই ক্ষমা চাওয়া উচিত নয় কি?

বিএনপির পাল্লা কিন্তু কম ভারী না। রাজাকারদের মূল পুনর্বাসন করে রাজনীতিতে তাদের স্টেক দিয়েছিলো বিএনপি।

আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ১৯৭১ থেকে ২০২৪ এত বছর পার হয়ে গেল জামায়াতদের এক্স্যাক্ট দল হিসেবে অপরাধ এবং কতজন তৎকালীন সময়ে কী কী করেছে তা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ করতে সকলেই ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াত যদি সত্যিই অপরাধ করে থাকে তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, হাসিনা জামায়াতকে প্রকৃতার্থে বিচারের মুখোমুখি না করে দায়মুক্তি ও প্রহসনের পথ বেছে নিলেন কেন!

৭১ সালে জামায়াত কোনো বড় অক্ষশক্তি ছিলো না। সারাদেশ মিলিয়ে জামায়াতের ৫টা সিটও হতো কিনা সন্দেহ আছে। ৭১-এর মূল বিরোধ ছিলো মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগের একাংশের রাজনৈতিক বিরোধ ও সামরিক হস্তক্ষেপের ফলশ্রুতিতে ভিনদেশী সহযোগিতায় পরিচালিত গৃহযুদ্ধ।

এইখানে জামায়াত কোনো ফ্যাক্টই না। যেই জামায়াতকে ঝাড়ে বংশে নির্বংশ করার চেষ্টা হয়েছে পাকিস্তান আমলে বারবার, যারা ভোটের হিসেবের পুরোটাই বাইরে, যাদের রাজনীতিতে বলার মতো স্টেকই নেই তারা ২৬শে মার্চের পর কী এমন জাদুর কাঠি পেয়ে গেল যে মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হয়ে গেল!

হ্যা, জামায়াত পাকিস্তান ভাঙতে চায়নি। তার সুদূরপ্রসারী কারণ ছিলো। জামায়াত ভূরাজনৈতিক হিসেবকে মুখ্য হিসেবে দেখেছিলো। আমাদের ভৌগোলিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমরা ৩ দিক দিয়ে একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত। আমাদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় একটি শক্তিশালী অবস্থানের প্রয়োজন ছিলো। ভূখণ্ডগত পার্থক্য থাকলেও পাকিস্তান ছিলো আমাদের সেই শক্তিশালী অবস্থান যার উপর আমরা আস্থা রাখতে পারি। দুই পাকিস্তান মিলে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা সম্ভব ছিলো। কিন্তু সেটা হয়নি। আওয়ামী লীগ ও ভারতের চক্রান্তে বিনষ্ট হয়ে যায় সেই ভূরাজনৈতিক অক্ষশক্তিতে পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। দুর্দশার করালগ্রাসে নিপতিত হয় দুই পাকিস্তান, পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ হয় কাশ্মীর। এক বাংলাদেশের জন্ম উল্টে দেয় উপমহাদেশের ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। অক্ষশক্তির রাশ তুলে দেয়া হয় ভারতের নিকট।

জামায়াত মূলত এই প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করে নৈতিকভাবে অখণ্ড পাকিস্তানের সমর্থন করেছিলো। কারণ জামায়াতের যে রাজনৈতিক আদর্শ সেখানে ভারতপন্থী হওয়া পুরোপুরি অসম্ভব।

কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে জামায়াতে ইসলামি সেটা মেনে নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। যেটি নীতি, আদর্শ গণতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের ভাবধারায় পরিচালিত। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশপন্থী হয়ে জামায়াতের অবদান অনস্বীকার্য। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রকৃতার্থে গণতান্ত্রিক চর্চা হয় জামায়াতে ইসলামির অভ্যন্তরে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে পরিবারতন্ত্রকে প্রাধান্য দেয়, জামায়াতে ইসলামি সেখানে মজলিসে শুরার আদলে সকলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে নেতৃত্ব সাজায়।

সুতরাং বাংলাদেশ গঠিত হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করেই এদেশে রাজনীতি করছে। এটা নিয়ে কোনো দ্বিমতের সুযোগ নেই।

জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশকে যদি ব্লেম দিতে হয় তাহলে ৫০ বছরেও কেন বিচার হলো না? কেন জামায়াতকে সবাই ছাড় দিয়ে গেলেন? আর দ্বিতীয় কথা হলো জামায়াত যদি ৭১-এর মানদণ্ডে নৈতিক অবস্থানের ভিত্তিতে বিচার করতে হয়, ক্ষমা চাইতে হয়, তাহলে যুদ্ধাপরাধীকে প্রধানমন্ত্রী বানানো বিএনপি কেন নয়? গনহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জুলফিকার আলি ভুট্টোকে সংবর্ধনা দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসা আওয়ামী লীগ কেন নয়?

৭১ নিয়ে রাজনৈতিক খেলা সকল দলই খেলেছে, ৭১ নিয়ে সবচেয়ে বেশি পুনর্বাসন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি করেছে। কিন্তু দায় চাপানোর বেলায় কেন জামায়াত?

২০১৯ সালে ডিসি অফিসে রক্ষিত তালিকা অনুসারে দেখা যায় রাজাকার, আলবদর, আলশামসের একটি বড় অংশই ছিলো আওয়ামী লীগ, পরবর্তীতে বিএনপির মতাদর্শিক লোক। এদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামির কর্মী অতি নগণ্য। বাস্তবতা হলো জামায়াতে ইসলামির তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থানই ছিলো নগণ্য। সেখানে জামায়াতকে সিঙ্গেল ব্লেম দিয়ে এরকম আলাপ তোলাই বৃথা।

২০১৯ সালে সরিয়ে ফেলা রাজাকারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা

আওয়ামী লীগে কয়জন যুদ্ধ করেছে? এই তালিকা আওয়ামী লীগ এখনো বানাতে পারেনি। তাদের সকল হেভিওয়েট নেতা হয় পাকিস্তানের উপর আস্থা রেখেছিলো, নতুবা ভারত গিয়ে মৌজ করছিলো।

পরবর্তীতে গঠন হওয়া বিএনপিও তথৈবচ। জিয়াউর রহমান ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ মতাদর্শ থেকে সকলকে রাজনৈতিক অধিকার দিয়ে, সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে বিএনপি গঠন করেন।

এটা ছিলো তৎকালীন সময় ও বর্তমান বিচারে সবচেয়ে স্মার্ট একটি মুভ। পলিটিকালি শার্প একজন লোক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে কিছু ভুল থাকলেও তাঁর সহধর্মিণী খালেদা জিয়া বিএনপির মতাদর্শিক ভিত্তি অবিচল রাখেন পূর্বের মতো।

কিন্তু বর্তমানের এই শূন্যাবস্থায় হঠাৎ করে বিএনপির কতিপয় লোকের মধ্যে আওয়ামী বয়ানে মুক্তিযুদ্ধ দেখার চেতনা জাগ্রত হয়েছে। উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে প্রধান করে গঠিত এই কোরামের ছায়াতলে নিজেদের মতাদর্শ পরিত্যক্ত করে জড়ো হয়েছেন একদল তথাকথিত বিএনপি।

তারা সেই পুরনো ভাষায় ও পদ্ধতিতে জামায়াতের উপর ব্লেম গেম চাপাচ্ছেন। এটা খুবই বাজে একটা ব্যাপার হতে যাচ্ছে। তাদের মনে রাখা উচিত এটা সেই কথা না বলে চুপ থাকার আমল না।

এখন ৭১ নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া করলে সবার দলীয় আমলনামাই বের হবে। আর তাতে দুর্গন্ধ বাড়বে বৈ কমবে না। মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। তারা আর আওয়ামী বয়ানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা দেখতে চায় না।

দিনশেষে মূল বক্তব্য হলো, যদি বিএনপি জামায়াতকে দলীয়ভাবে ৭১ নিয়ে কাঠগড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখে থাকে তাহলে রাজাকার পুনর্বাসনের দায়ে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক রাজাকারকে আশ্রয় দেয়ার অপরাধে বিএনপিকেও দলগতভাবে কাঠগড়ায় উঠতে হবে, দায় স্বীকার করতে হবে, জিয়াউর রহমান – খালেদা জিয়া ভুল করেছিলেন এটা স্বীকার করতে হবে। এবং এই দায়ে যদি জামায়াতে ইসলামির নাম পরিবর্তন করতে হয় তাহলে বিএনপিকেও সর্বোচ্চ সংখ্যক দায়ভার নিয়ে নিজেদের নাম পরিবর্তন করে নতুনভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করতে হবে। এখন আপনারা যারা ৫ আগস্টের পর বিএনপির হর্তাকর্তা হয়েছেন তারা কি এটা মেনে নেবেন?

তাহলে আসেন ৭১-২৫-এর বিচার শুরু হোক, দেখি কার দায় কতটা। কে কতটা বাংলাদেশপন্থী।

ইনকিলাব জিন্দাবাদ…