বাংলাদেশের ইতিহাসে আরো একটি নতুন দিগন্ত হয়তো হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে আরো একটি নতুন দিগন্ত হয়তো হাতছানি দিয়ে ডাকছে

জামায়াত একটা মোক্ষম চাল চেলেছে। জুলাই সনদ, গনভোট ইস্যু নিয়ে তার ২ প্রতিপক্ষ কে পুরো ২-০ গোলে পরাজিত করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে।
এদিকে বিএনপি প্রথমে জুলাই সনদ নিয়ে ধরা খেলো, এরপর এখন গনভোট – জুলাই সনদ নিয়ে একসাথে ধরা খাচ্ছে।

জামায়াত সাক্ষর করে চুপচাপ নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে। জুলাই সনদ, গনভোট নিয়ে জামায়াতের কোনো নড়চড় নেই। তারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে বিএনপি প্রথমে গড়িমসি করেছে সাক্ষর করতে। ৭ ঘাটের পানি খেয়ে হেন তেন করে শেষমেশ সেই সাক্ষর করেছে। এখন আবার শুরু হয়েছে গনভোটের উত্তাপ। সেখানেও বিএনপি উশখুশ করছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।

আর এনসিপি সাক্ষর না করে পড়েছে আরেক ফ্যাকাড়ে। নাই প্রতীক, করে নাই সাক্ষর। জামায়াত কে এমনভাবে ব্যাশিং করেছে যে জামায়াত তাকে সুন্দর করে “একলা চলো” পথে ছেড়ে দিয়েছে।

জামায়াত এখন পুরোপুরি সুবোধ বালক হয়ে মাঠের কার্যক্রমে মনোনিবেশ করছে। তাদের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন সকল জায়গায় নির্বাচনী হাওয়া লেগেছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড সকল পর্যায়ের সুসংগঠিত কমিটি ইতিমধ্যে পুরোপুরি সক্রিয় করেছে।

শুধু তাই না। অনলাইন দুনিয়ায় জামায়াত আগের থেকেই অগ্রগামী। তাঁরা যেকোনো রাজনৈতিক দল থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে আছে। বর্তমান সময়ে অনলাইন ইনফ্লুয়েন্স কে কোনোভাবে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সেইখানে জামায়াত নিজেদের অবস্থান পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরাক্রমশালী। অনলাইন এক্টিভিজমে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য।

তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের পেজগুলো পুরোপুরি অপ্রফেশনাল ও অগোছালো। প্রায়শই নানাবিধ বালখিল্য সুলভ ফেসবুক পোস্ট দিয়ে হাস্যরসের স্বীকার হয় ও পোস্ট ডিলেট করতে বাধ্য হয়। বিএনপির এক অফিসিয়াল পেজের এডমিন প্রায় ৭০ জন! অন্যদিকে জামায়াতের পেজে মাত্র ১১ জন।

তারথেকে বড় বিষয় জামায়াতের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখন মাঠে। কিন্তু বিএনপির রাজনীতি যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় সেই নেতা এখনো বিদেশ বিভূঁইয়ে। কবে আসবে সেটা তাঁর দলের নেতাকর্মীরাও জানে না।

সারাদেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। কমিটি নেই সবখানে। মারামারি, রাহাজানি, বিশৃঙ্খলতার এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি সর্বত্র। এক কমিটিতে শতাধিক লোকজন পদ পায়। আবার সেটা নিয়ে মারামারিও হয়। বলা চলে নির্বাচনের হাওয়া থেকে তারা অনেকটাই বিচ্যুত। ঘরের অর্ন্তকোন্দল মেটাতে মেটাতে তাঁদের ত্রাহি দশা। নূন্যতম কোনো চেইন অফ কমান্ড না থাকায় নির্বাচন ঘনিয়ে এলে বিদ্রোহী প্রার্থীর একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে সেটা সহজেই অনুমেয়।

আর আঞ্চলিক রাজনীতিতে জামায়াত বিগত ১ বছরে যেভাবে সুসংগঠিত হয়েছে সেখানে অবলীলায় রাহাজানি করে বিএনপি পার পেয়ে যাবে সেটা ভাবা এখন বেশ দুরাশাই বটে। সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের বিভিন্ন নির্বাচনী কার্যক্রমে বিএনপির স্থানীয় কর্মীদের হামলা প্রমান করে সামনের নির্বাচনে এ আক্রোশ আরো বাড়বে। তবে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে জামায়াত যেভাবে বিএনপিকে কোনঠাসা করেছে অনেকটা, মাঠের রাজনীতিতে কতোটা পারবে সেটা সময়ই বলে দিবে বা কিছুটা হলেও এখন দিচ্ছে।

অন্তত পক্ষে ছাত্র সংসদ নির্বাচন গুলো অনেক কিছুরই পূর্বাভাস দিচ্ছে। বিএনপিকে চরম পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে। সুতরাং সবদিক বিচারে জামায়াত যে লেভেলে খেলছে সে লেভেলের ধারেকাছেও বিএনপি এখন নেই।

সব বাদ দিলাম। বিএনপি এতদিনেও ১ জন প্রভাবশালী এক্টিভিস্ট দাড়া করাতে পারে নি। বরং যারা সহানুভূতিশীল ছিলো তাদেরকে ও হারিয়েছে। অন্ধের যষ্টি ফাহাম আব্দুস সালাম ও তার গ্রহনযোগ্যতা হারিয়েছে ইতিমধ্যে।

সুতরাং সামনের সময়টা বড়ই রংবেরঙের সময় হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে আরো একটি নতুন দিগন্ত হয়তো হাতছানি দিয়ে ডাকছে। শহীদী ফুলেরা জান্নাতের বাগান থেকে অপেক্ষা করছে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার। প্রাচীরের ওপারে মঞ্জিলে মাকসুদ সন্নিকটে।