আজকে তালেবান সরকার এর শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখাঞ্জর নির্দেশে কিছু বইও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ বইগুলোর তালিকায় আছে:
- আবুল আলা মওদূদির (রহ.) কোরআনের চার মূলনীতি
- সাইয়েদ কুতুবের (রহ.) ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচার
- ইউসুফ কারজাভীর (রহ.) হালাল-হারামসহ কিছু বই।
এই বই গুলোকে বলা হয়েছে মিথ্যা বিশ্বাস ও শিয়া ধর্মের বই হিসেবে।
তালেবান নিয়ে বাংলাদেশ মুলুকে একটা ফ্যান্টাসি আছে। অনেকে তাদেরকে “ইসলামিক শরীয়াহ” ভিত্তিক শাসন বলে আত্মতৃপ্তি পেতে চেষ্টা করেন।
কিন্তু বাস্তবতা কতটুকু জানছি আমরা। তালেবান কি প্রকৃতার্থে ইসলামি শাসনব্যবস্থা করছে কি না বা কোন ভিত্তি তে করছে সেটাও একটি প্রশ্ন। তাদের আদর্শিক বিষয় নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে অনেক মতভেদ আছে। অবশ্য সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু তালেবান তাদের প্রকৃত মতাদর্শ তুলে ধরতে বরাবরই ব্যর্থ হয়েছে। ইতিপূর্বে তাদের এক্সট্রিম আচরণ আফগানিস্তান কে ২ যুগের ও অধিক সময় ধরে ভুগিয়েছে। এবার তারা কিছুটা নিয়মতান্ত্রিক হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো পরিষ্কার ধারণা দিতে পারছে না।
এরকম কাছাকাছি একটি বিপ্লব সিরিয়ায় হলেও সেখানে প্রথমে ইসলামি বিপ্লব মনে হলেও পরবর্তী তে দেখা গিয়েছে সেটা মূলত ইসরায়েল এবং আমেরিকার একটি পাপেট বিপ্লব। শারা ইসরায়েলকে বলা চলে খুল্লামখুল্লা ভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। হয়তো খুব শীঘ্রই আব্রাহাম একর্ডে ও সিরিয়া কে দেখতে পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে আল-শারা জোলানি সিরিয়ার শাসনভার গ্রহণের পর চতুর্থবারের মতো একটি ইহুদি প্রতিনিধিদল, যার মধ্যে রাব্বিরা অন্তর্ভুক্ত, দামেস্ক সফর করেছে। তারা বেশ কয়েকজন সিরিয়ার কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।
আফগানিস্তান কে নিয়ে আমি এমন কিছু বলছি না। কিন্তু যে তালেবান ইসলামি আন্দোলনের পথিকৃৎ ৩ প্রথিতযশা ব্যক্তির বই নিষিদ্ধ করতে পারে সে তালেবানকে আমি সুযোগসন্ধানী মুখোশধারী ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না। তালেবান যেভাবে ভিন্নমত দমন করছে তাতে ইসলাম নিজেই তো সেখানে বিপন্ন!
তালেবান একটি দেশভিত্তিক সংগঠন। তারা গঠিত হয়েছিলো নিজেদের অভ্যন্তরীন সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা মুজিব বাহিনীর মতো। পরে কনভার্ট হয়েছে রক্ষীবাহিনী হয়ে। তালেবান ও অনেকটা সেরকম। অন্যদিকে আবুল আলা মওদূদি (রহ.), সাইয়েদ কুতুব (রহ.), ইউসুফ কারজাভী (রহ.) দুর্বিষহ একটি সময়ে এসে সারা বিশ্বের ইসলামি আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ইসলাম নিয়ে তাদের ধ্যান জ্ঞান ছড়িয়ে গিয়েছে সীমানা পেরিয়ে। মুসলিম ব্রাদারহুডের মাধ্যমে তারা তরুনদের মধ্যে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। ইসলামকে বাস্তবতা সাথে মুখোমুখি না বরং মানানসই হিসেবে তুলে ধরেছিলেন তারা। এরা প্রত্যেকে অবর্ণনীয় কষ্ট ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন শুধুমাত্র ইসলামকে আঁকড়ে ধরার কারনে।
সেইসব মর্দে মুজাহিদদের বই যারা নিষিদ্ধ করে। তাদের লক্ষ্য তো সুস্পষ্ট। তারা তো সেই ভিন্নপথেই যাচ্ছে। এটা তো ইসলামের পথ না। আফসোস আফগানিস্তানের প্রতি। সুন্দর সাজানো গোছানো একটি দেশ সত্যি আজ আরেক হায়েনার কবলে!
আর ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলামি বিপ্লবের খোলসে শরীয়াহ আইনের ধ্বজাধারী হিসেবে নিজেদের দাবি করা দুটি দেশের সম্পর্ক ইসরায়েল ও ভারতের সাথে!
অবশ্য এখানে আরেকটা মিল আছে। উক্ত চারটি দেশই চরম এক্সট্রিমিস্ট তাদের নিজেদের তথাকথিত মতাদর্শে! এদিক দিয়ে অবশ্য ৪ টি দেশের সামহাউ মিল আছে।





