২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিল তথাকথিত প্রগতিশীল বাম গোষ্ঠী। শহীদ মাওলানা নিজামী ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতিনিধিদের ফাঁসির দাবিতে বামরা গলা ফাটিয়েছিল। বিগত ১৭ বছরে ছাত্রলীগের ছত্র ছায়ায় এমন কোনো কুকর্ম নেই সেটা বামেরা করে নাই। তাদের অপরাধের ফিরিস্তি আওয়ামী ছাত্র সংগঠনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে এদের চারিত্রিক দ্বিচারিতা, সুবিধাবাদ ও আদর্শহীনতা ছাত্রলীগকেও হার মানায়। এমন কি ৫ ই আগস্টের পর আওয়ামী বিএনপি ভাই ভাই এই ন্যারেটিভ ও আসছে বাম থেকে।
বাংলাদেশে উইথআউট আওয়ামী এক্সিসটেন্ট কখনোই বামেরা মেনে নিতে পারে নাই। বামেরা হলো অনেকটা সেই পরগাছার মতো যা গাছের গায়ে আটকে থেকে সার্ভাইভ করে। এরা মরলেও লীগ বাঁচলেও লীগ। এরা আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দেহে আটকে থাকা পরজীবী। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের অস্তিত্ব কল্পনাতীত। ছাত্রলীগ আর বাম দুই নামে এক শরীর। শিকড় একই, ফলাফলও এক – সন্ত্রাস, দমন, নিপীড়ন। এখন হয়তো রসালো আলাপ শুনে অনেক বিএনপি মনে করছে যে বামরা ভালো হয়ে বিএনপির গাছের ডালে এসেছে।
এটা পুরো ভুল! সুযোগ দেন দেখবেন ওই বামরাই শাহবাগ আর রাজু ভাস্কর্যের সামনে স্লোগান আর গন অবস্থান সৃষ্টি করবে বিএনপি নিষিদ্ধের জন্য।
বামরা কতটা টক্সিক এটা বোঝার জন্য রকেট সাইন্স লাগে না। ওদের অতীত হিস্ট্রি ধরে টান দিলে গড়গড় করে সব বেরিয়ে আসবে।
৫ ই আগস্টের পর সবচেয়ে বড় যে ভুল হয়েছে সেটা হলো ছাত্রলীগের পাশাপাশি ছাত্র ইউনিয়ন কে দৌড়ের উপর না রাখা, নিষিদ্ধ না করা। অথচ শাহবাগ – শাপলা ম্যাসাকার এর পুরো দায়ভার এদের। ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়ন দুটি দেহ এক প্রান।
এদেরকে টার্মিনেট না করে বিপজ্জনক ভাবে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে। আর এরাই একের পর এক অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
ন্যরেটিভ বিল্ডিং পৃথিবীর সবচাইতে এক্সপার্ট একটা কাজ। আওয়ামী লীগ – বামেরা এইটা সবচেয়ে ভালোভাবে পারে। এইখানে বিএনপি জামায়াত দুগ্ধপোষ্য শিশু ছাড়া কিছুই না।
আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে পাতা ফাঁদে পা দেয়া। বিগত ১৬ বছরের মতো বিএনপি জামায়াত এখনো সেই নানান ফাঁদেই পা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলাফল কখনোই সুখকর হবে না।
বাম দের অপকর্মের ফিরিস্তি আওয়ামী লীগের চেয়ে কম নয়। কিন্তু প্রোপার জাজমেন্ট না হওয়ায় তারা ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে বারবার। বামদের প্রতি বারবার উদারতা দেখিয়ে বিএনপি নিজের পায়ে কুড়াল মারছে। অতীতে জিয়াউর রহমান এই বামদের স্পেস দিয়ে নিজের জীবন দিয়ে তার মূল্য দিয়েছিলেন।।
এবার বিএনপি আবারও বামদের লাই দিচ্ছে। এর ফলাফল কখনোই ভালো কিছু বয়ে আনবে না, এটলিস্ট এরা কখনোই অন্তপ্রান বিএনপি হবে না। এদের মূল শিকড় প্রোথিত আওয়ামী অন্তরে। সুতরাং বিএনপির এসব আশা দুরাশা। বাম প্রেম বিএনপিকে কত বড় বিপদে ফেলবে সেটা হয়তো এখনো তাঁরা বুঝছে না। তারা যদি এটলিস্ট শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে জানতো তার শহীদের কথা স্মরণ করতো তাহলে এই বাম দের কোলে উঠতো না।
আজ যখন কিছু বাম লাঠিপেটা হচ্ছে, তখন মানবাধিকার কর্মীদের মাতম শুরু হয়, অথচ ২০১৩ সালে যখন শাহবাগ শাপলায় আলেমদের রক্তে রাজপথ লাল হয়ে গিয়েছিল, তখন তাদের কেউ ছিল না। শহীদ মাওলানা নিজামী, সাঈদী, কাদের চৌধুরীদের হত্যা এই ইতিহাস কি আমরা ভুলে গেছি?
ইতিহাস কি এত সহজে মুছে ফেলা যায়? যারা শাহবাগের রাজপথে গণহত্যার উল্লাস করেছে, যারা ৫ মে শাপলায় মাদ্রাসার শিশুদের রক্তে রাজপথ রাঙিয়েছে, তারা কোনোভাবেই ‘মানবাধিকার’ পেতে পারে না। এই রক্তের ইতিহাস শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থী সংগঠনগুলোর হাতেও লেগে আছে।
একজন বামকে আমি ছাত্রলীগের চাইতে কোনো অংশে কম মনে করি না। আমার চোখে এখনো ভাসে সেই রক্তাক্ত শাপলা, অবিশ্রান্ত রক্তের ধারা, পাঞ্জাবি পরা দেহের তীব্র মরণ-চিৎকার, চোখে ভাসে শহীদ নিজামীর শ্বেত শুভ্রতায় মোড়ানো দেহ, আল্লামা সাঈদীর বিনা চিকিৎসায় শাহাদাৎ।
এর চাইতে দুনিয়ার কোনো নির্মমতা বড় নয়। রক্তাক্ত শাপলার আর শহীদ দের হত্যার বিচার করেন। এরপর বামরা নির্যাতিত হচ্ছে সেই আওয়াজ তুইলেন। এর আগে বাম এবং ছাত্রলীগ দুইটাই গনহত্যাকারী নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন। বিগত ১৬-১৭ বছরের রক্তের দাগ লেগে আছে এদের হাতে। দুই একটা লাথি উষ্ঠা কিছুই না। ১৩ সালে বৃদ্ধ আলেমদের এরচেয়ে নির্মমভাবে মেরেছিলো তাঁরা। তখন প্রতিবাদ কোথায় ছিলো।
বিচার হোক, শাস্তি হোক, পুনর্বাসন হোক। এরপর তাদের ব্যাপারে সাধারণ মানবিক অধিকার, মর্যাদার কথা চিন্তা করা যাবে। ম্যাস মার্ডারার দের জন্য কোনো সহমর্মিতার সুযোগ নাই। একজন খুনি অলওয়েজ খুনি। সুব্রত বাইন যেভাবে ট্রিট হবে একজন বাম ছাত্রলীগ ও সেভাবে ট্রিট হবে। খুবই সহজ ইকুয়েশন।
সো পিপল অফ বিএনপি। একটু লেখাপড়া করেন। হিস্ট্রি জানেন। বাম দের হিস্ট্রি অনেক আমলনামা জর্জিত হিস্ট্রি। খোচা দিলেই সব দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসবে। পরতে পরতে বিএনপি জামায়াত বিদ্বেষের নমুনা দেখবেন তখন। সুতরাং একটু জানেন কার কি অবদান। শুধু জামায়াত বিরোধিতার জন্য বামের কোলে উঠে সহমত ভাই কইরেন না। তাহলে বামেরা সাম্যের মতো লাশের সংখ্যা বাড়াবে বৈ কমাবে না। এখনো হয়তো বাম কি জাত সেটা চিনতে পারেন নাই। এদের স্পেস এবং লাই দেয়াটা হবে সবচেয়ে বড় আত্মবিধ্বংসী কার্যক্রম।
জামায়াত যদি আদর্শভিত্তিক রাজনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে ‘কাউকে পেলে চলবে’ মানসিকতায় চলে যায়, তাহলে সে জামায়াত আর থাকবে না। আদর্শের প্রশ্নে জামায়াতকে আরও কঠোর হতে হবে। ভোটের রাজনীতি প্রয়োজন, কিন্তু আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা হারিয়ে নয়। হ্যা পাওয়ার পলিটিক্স করছেন, ঠিক আছে। কিন্তু দেখে শুনে পদে উঠান। সবাই তো সুফি দরবেশ না। কে কেমন এইটা ফিল্টারিং করাটা জামায়াতের সবচেয়ে সুদক্ষ কাজ ছিলো এতদিন। সেটাকে জলাঞ্জলি দিয়েন না। মনে রাখা উচিত রাজনীতি নয়, ন্যারেটিভ এই যুগের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
দিনশেষে কথা একটাই প্রোপার জাজমেন্ট ছাড়া ছাত্রলীগ ও বামদের দায়মুক্তি বা সাধারণ মানবাধিকার পাওয়ার কোনো অধিকার নেই।
২০১৩ সালের হত্যাযজ্ঞ, ৫ মে’র গুলি, শাপলায় মৃত্যু—এই ইতিহাস ভুলে যারা বামদের ‘গণতান্ত্রিক শক্তি’ বলছে, তারা অপরাধে অংশ নিচ্ছে। ছাত্রলীগ ও বামপন্থীরা যতদিন না ২০১৩– ২৪ এর রক্তাক্ত ইতিহাসের বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে, ততদিন তাদের কোনো মানবাধিকার দাবির জায়গা নেই।
বিচার হোক তারপর পুনর্বাসন করে ফিরিয়ে দেয়া যাবে মানবাধিকার। ততদিন নাৎ*সি হিসেবে এরা ট্রিট হবে। এটাই স্বাভাবিক নয়কি! পাপ করবেন কিন্তু পাপের ফল ভোগ করবেন না। এটা তো হতে পারে না। ৫ ই আগস্টের পর আইন যদি কাজ করতো তাহলে তো আর এই মব দেখা লাগতো না। এটা বন্ধ করতে হলে আইনকে অবশ্যই ২০১৩ কে সক্রিয় করে বিদ্যামান সকল বামদের প্রোপার বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এর আগে “মজলুম জালিম হলো” এসব আলাপ গ্রহনযোগ্য না। কারন সেই হিসাবে আসলে ৫ ই আগস্টের পর লীগকে রামধোলাই সবচেয়ে বেশি দিয়েছে বিএনপি। এখান বলেন সেটাও মজলুম জালিম হয়ে ওঠার নিদর্শন!
কে মজলুম আর কে জালিম এটলিস্ট সেটার প্রেক্ষাপটে ও সংগাটা ভালো করে জেনে আসা উচিত।





